অটল টানেল, মানালী ও লেহ-র মধ্যে দূরত্ব কমে গেল ৪৬ কিমি
মহাসড়কের উপর নির্মিত বিশ্বের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গের উদ্বোধন হল ৩ অক্টোবর। রোটাং-এ অটল সুড়ঙ্গ। উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এই সুড়ঙ্গ মানালী এবং লেহ-এর মধ্যে ৪৬ কিলোমিটার সড়কপথে দূরত্ব কমিয়ে দিল, ফলে, ৪-৫ ঘন্টা সময় বাঁচবে।
মানালীর সঙ্গে লাহুল-স্পিতি উপত্যকার সারা বছর ধরে যোগাযোগ নিশ্চিত করার জন্য ৯.০২ কিলোমিটার লম্বা এই সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা হয়েছে। বছরের প্রায় অর্ধেক সময় প্রবল তুষারপাতের জন্য এই উপত্যকা বিচ্ছিন্ন থাকে. এখন থেকে আর তা হবে না।
এই সুড়ঙ্গটি হিমালয়ের পীর পঞ্জল অঞ্চলে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। সমুদ্রতল থেকে ৩,০০০ মিটার বা ১০,০০০ ফুট উঁচুতে সুড়ঙ্গটি অবস্থিত। অটল সুড়ঙ্গের দক্ষিণ প্রান্ত মানালী থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সুড়ঙ্গের উত্তর প্রান্তটি লাহুল উপত্যকার সিসুর তেলিং গ্রামে অবস্থিত।

এই সুড়ঙ্গটি অশ্বক্ষুরাকৃতির। এখানে একটি পাইপের মধ্যে দুই লেনের সড়কপথ তৈরি করা হয়েছে। এর উচ্চতা ৫.৫২৫ মিটার। সুড়ঙ্গটি ১০.৫ মিটার চওড়া। এখানে ৩.৬ X ২.২৫ মিটার অগ্নি প্রতিরোধী আপৎকালীন রাস্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অটল সুড়ঙ্গ দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার গাড়ি এবং দেড়হাজার ট্রাক ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে যেতে পারবে।
এই সুড়ঙ্গে অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যাল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যার সাহায্য তীর্যকভাবে বায়ু চলাচল, নজরদারি ব্যবস্থা, সুপারভাইজারি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাক্যুইজিশন পদ্ধতিতে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা এবং সুড়ঙ্গ আলোকিত করার যথাযথ রাখা হয়েছে।
নিরাপত্তার কথা ভেবে সুড়ঙ্গের দুই প্রান্তে গতি নিয়ন্ত্রক রাখা হয়েছে। প্রতি ১৫০ মিটার অন্তর বিপদকালীন পরিস্থিতিতে টেলিফোনে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতি ৬০ মিটার অন্তর অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা রাখা হয়েছে। একটি করে ফায়ার-হাইড্র্যান্ট রাখা আছে। প্রতি ২৫০ মিটার অন্তর সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সুড়ঙ্গের ভেতর কি ঘটছে তা জানা যাবে। প্রতি এক কিলোমিটার অন্তর বাতাসের গুণমান নজরদারি করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতি ২৫ মিটার অন্তর আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বেরোনোর রাস্তার দিক-নির্দেশনা করা আছে। পুরো সুড়ঙ্গ জুড়ে বেতার সম্প্রচার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতি ৫০ মিটার অন্তর আগুন লাগলে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতি ৬০ মিটার অন্তর ক্যামেরা বসানো আছে।
২০০০ সালের ৩ জুন রোটাং পাসের নিচে এই সুড়ঙ্গ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। ২০০২ সালের ২৬ মে শিলান্যাস করা হয়। সীমান্ত সড়ক সংগঠন (বিআরও) ভৌগোলিক এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের নিরন্তর মোকাবিলা করে এই সুড়ঙ্গ নির্মাণ করেছে। এই সুড়ঙ্গ নির্মাণের সবথেকে কঠিন অংশ ছিল সেরি নালার চ্যুতি অংশের ৫৮৭ মিটার।
৩ অক্টোবর সুড়ঙ্গের