আমরা প্রতিদিন নিজেদের অজান্তে কত যে বিপদ ডেকে আনি তার হিসেব নেই। যেমন ধরুন, একটা ছোট্ট বিষয়। আমার, আপনার-সবার সঙ্গেই এটা ঘটে। চপের দোকানে গেলেন। চপ বিক্রেতা তেল সপসপে ভাজা চপ খবরের কাগজের ঠোঙায় ভরে হাতে ধরিয়ে দিলেন। বাড়িতে আনার পরে দেখলেন, তেলে ভিজে গিয়েছে কাগজ। ঝালমুড়ি কিনলেন। সেটাও দেওয়া হল কাগজের ঠোঙাতেই। রাস্তার ধারের হোটেল থেকে ওমলেট কিনলেন। কাগজের ঠোঙায় ভরেই ওমলেট আপনার হাতে তুলে দিল হোটেলের ছেলেটি। অথচ, আমরা জানি না খবরের কাগজের তৈরি ওই ঠোঙা কিভাবে বিপদ ডেকে আনছে আমাদের জন্য।
খবরের কাগজের কালি থেকে কি বিপজ্জনক রাসায়নিক উপাদান শরীরে ঢুকছে, ২০১৬ সালে ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অফ ইন্ডিয়া’ (এফএসএসএআই) নির্দেশ জারি করে সতর্ক করে দেয়। এফএসএসএআই জানায়, দিনের পর দিন খবরের কাগজে মোড়া খাবার খেলে শরীর বিষাক্ত উপাদানে ভরে যায়। খবরের কাগজের কালি, পিগমেন্ট, অ্যাডেটিভ, প্রিজারভেটিভস সহ অন্য রাসায়নিক থেকে ক্যানসারের মতো রোগও হতে পারে। এছাড়া ব্যবহৃত খবরের কাগজে প্যা্থোজেনিক মাইক্রোঅর্গানাইজমস থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
খবরের কাগজের টক্সিক পদার্থ হজমের সমস্যা তৈরি করে। অনেকে বাড়িতে তেলজাতীয় খাবার আনার পরে বা রান্নার পরে স্বাস্থ্যের কথা ভেবে খবরের কাগজ দিয়ে অতিরিক্ত তেল শুষে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। শরীরে যাতে বেশি তেল না ঢোকে সেজন্যই এই ব্যবস্থা। কিন্তু তাঁরা জানেনও না, এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে। এফএসএসএআই এর মতে আমরা ভারতীয়রা খবরের কাগজের এমন ব্যবহারের ফলে দিন দিন একটু একটু করে ‘স্লো পয়জেনিং’ এর শিকার হয়ে চলেছি।
কি ভাবছেন? খুব দেরি হয়ে গিয়েছে! না। মনে রাখবেন, বেটার লেট দ্যান নেভার। এতদিন যা হয়েছে, হয়েছে। এখন থেকে সচেতন হন। প্রতিজ্ঞা করুন, কোনও হোটেল, দোকান থেকে খবরের কাগজে মুড়ে কোনও খাবার কিনে আনবেন না। বিক্রেতা দিতে চাইলে প্রতিবাদ করুন। তাঁকে ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বোঝান। অন্য ক্রেতাদেরও বুঝিয়ে দিন। ধীরে ধীরে সচেতনতা গড়ে উঠবে। একদিন ঠিক বন্ধ হয়ে যাবে এই বদভ্যাস।
+ There are no comments
Add yours