শীতের ছুটি পড়তেই টিপু নাছোড়! বেড়াতে যাবে। ‘কথা নেই-বার্তা নেই, বেড়াতে যাব বললেই হল? যখন তখন জেদ করতে নেই টিপু। দাঁড়া, বাবা অফিস থেকে ফিরুক। বাবার ছুটি আছে কি না দ্যাখ’-বললেন পুতুল। টিপুর মা পুতুল একেবারেই হাউস ওয়াইফ। ঘর সাজানো থেকে বাগান, এমন কি ক্লাস সিক্সের মেয়েকে পড়ানো, সবই একার হাতে সামলান পুতুল। ডাক্তারি পাশ করেও তিনি টিপুকে নিয়েই মেতে থাকেন। টিপু খুব ভাল করেই জানে, মা রাজি হলেই বাবাকে রাজি করানো কোনও ব্যাপার নয়। তার কথা বাবা কখনও ফেলবেন না।
স্কুল থেকে ফিরে দুপুরে ঘুমিয়ে নিল টিপু। সন্ধ্যা হতেই তার মন পড়ে আছে দরজার দিকে। বাবা কখন আসবে। টিভি দেখতে বসেও মন দরজার দিকেই। ঘড়ির কাঁটা ন’টা ছুঁতেই বাইরের দরজায় গ্রিলে আওয়াজ হল। টিপু বুঝল, বাবা আসছে। অন্য দিন সাতটার মধ্যে অরুণবাবু ফিরে আসেন। আজ ঘন্টা দু’য়েক দেরি হল। অরুণবাবু একটি নার্সিং হোমের চাইল্ড স্পেশালিস্ট। যখন তখন ছুটি পান না। সোফায় বসে টিপুকে বললেন, ‘তোর ছুটি ঠিক ক’দিনের?’ টিপু বড় বড় চোখ করে বলল, সাত দিন। মনে মনে কিন্তু ততক্ষণে বুঝে গিয়েছে, বাবা নিশ্চয়ই কিছু একটা প্ল্যান করেছে। রান্নাঘর থেকে চা নিয়ে বসার ঘরে ঢুকলেন পুতুল। ঠিক তখনই অরুণবাবু বললেন, ‘দু’দিনের ছুটি কোনও রকমে ম্যানেজ করেছি। চল, শান্তিনিকেতন ঘুরে আসি।’ বাবার কথা শেষ হওয়ার আগেই এক দৌড়ে বাবার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল টিপু। মেয়ের আদর থেকে বাঁচতে অরুণবাবু তখন চিৎকার করছেন, ‘ওরে ছাড়, ছাড়। বাইকে থেকে এসে এখনও হাত-পা ধুই নি!’
অরুণবাবু ফ্রেশ হয়ে এসে ব্যাগ গোছানো শুরু করে দিলেন। পর দিন সকাল সাতটায় রওনা হবেন। ঠিক হল, শান্তিনিকেতনে সারা দিন কাটিয়ে সন্ধ্যের দিকে দুর্গাপুর ফিরে কোনও হোটেলে থাকবেন। পরদিন সকালে পুরুলিয়ার গড় পঞ্চকোট যাবেন। রাতে সেখানে থেকে রবিবার কলকাতা। সোমবার সকালে আবার নার্সিংহোম।
কলকাতার থেকে শান্তিনিকেতনে বেশ ঠান্ডা পরে। তাই ওয়ার্ডড্রোব থেকে তিন জনের শীতের পোশাক নামিয়ে ঢোকাতেই ব্যাগ বোঝাই। টিপুর খুব আনন্দ। সারা বাড়িতে এক্কা দোক্কার মতো করে নেচে চলেছে। সিমলা যেতে যেমন গরম পোশাক নিতে হয়েছিল শান্তিনিকেতন যেতেও তাই করতে হচ্ছে ভেবে খুব মজা পাচ্ছে সে। টিপু শুধু ভাবছে, বাড়িতে হাফ সোয়েটারেই দিন কেটে যায়। সেখানে মাত্র ঘন্টা তিনেকের পথ পেরিয়েই বড় সোয়েটার, পুল-ওভার চড়াতে হবে শরীরে! হাতে তালি দিয়ে সে মায়ের কাছে শেখা ‘শীতের হাওয়ায় লাগল নাচন’ গানটি গেয়েই চলেছে। রাতের খাওয়া সেরে ক্লান্ত টিপু ঘুমিয়ে পড়ল। মা বললেন, ‘যাক এত নাচানাচিতে কাজ হয়েছে। অন্য বার তো ঘুরতে যাওয়ার আগের রাতে প্রশ্ন করে করে জ্বালিয়ে মারে। নিজে ঘুমায় না। আমাকেও ঘুমোতে দেয় না।’
সকালে দু’জনে আগে রেডি হয়ে তারপর মেয়েকে ঘুম থেকে তুললেন তাঁরা। এক ডাকেই বিছানার উপরে উঠে বসল টিপু। সকাল সাতটায় গাড়ি ছাড়ল। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে যত পানাগড়ের দিকে আসছে তত যেন ঠান্ডা চেপে বসছে। হাতের কাছে রাখা পুলওভার চড়িয়ে নিল টিপু। রাস্তার দু’পাশের খেতে সোনালি রঙের ধানের শিসের সারি। ঠান্ডায় হাত-পাগুলো কেমন একটা জড়োসড়ো হয়ে গিয়েছিল। পানাগড়ের দার্জিলিং মোড়ে এসে ব্রেকফাস্টে আলুর পরোটা আর মায়ের পরামর্শে হাফ কাপ কফি খেতেই বেশ চনমনে মনে হল টিপুকে। প্রি-অ্যানুয়াল পরীক্ষার জন্য ক’দিন বেশ চাপ গিয়েছে টিপুর। এখন এই তিনদিনের ট্যুরে বেরিয়ে টিপুর নিজেকে বেশ ফুরফুরে মনে হচ্ছে। আসলে, ছুটির সময় টানা ঘরে বসে থাকতে টিপুর একদম ভাল লাগে না।
দার্জিলিং মোড় থেকে গাড়ি চলেছে রাজ্যসড়ক ধরে। বাবার কাছে ইলামবাজারের জঙ্গলের কথা শুনেছে টিপু। কিন্তু চোখের সামনে সেই জঙ্গল দেখে গায়ে কাঁটা দিল তার। সজারু, শিয়াল, বনশুয়োর এমনকি মাঝেমধ্যে নাকি হাতির দেখাও মেলে। টিপু মনে মনে ঠাকুরকে বলছে, বাচ্চা সহ মা হাতি যদি দেখতে পাই! শাল পিয়ালের জঙ্গলে সকাল সাড়ে দশটাতেও কুয়াশা সরেনি। যেন গাছের ফাঁকে আটকা পড়েছে সূর্য। গাড়ির ভিড় থাকলেও টিপুর আবদারে অরুণবাবু জঙ্গলের পাশে গাড়ি দাঁড় করালেন। মায়ের হাত ধরে জঙ্গলের মধ্যে বেশ কিছুটা হেঁটে গেল টিপু। কত রকম পাখি। বাবার ডাকে ফিরে এল টিপুরা। দু’দিন পরেই ৭ পৌষ। তখন শান্তিনিকেতনে বড় মেলা বসে, মায়ের কাছে শুনেছে টিপু। দেশ বিদেশ থেকে বহু গুণিজন আসবেন, তারই প্রস্তুতি চলছে। পুরো শান্তিনিকেতন জুড়ে যেন সাজো সাজো রব। কিন্তু তারা থাকতে পারবে না। বাবার ছুটি নেই। তাছাড়া আগে থেকে প্ল্যান করা হয়নি। তাই হোটেলও ফাঁকা নেই। পুতুল আর টিপুর মনের কথা বুঝতে পেয়ে অরুণবাবু বললেন, ‘সামনের বার আগে থেকে প্ল্যান করে পৌষমেলার সময় আসব।’’ শান্তিনিকেতনের সংগ্রহশালা থেকে কবিগুরুর বাড়ি, উপাসনা মন্দির, ছাতিমতলা- সব ঘুরে দেখতে দেখতে বিকেল গড়িয়ে কখন যে সন্ধ্যে নেমে এল- খেয়ালই নেই কারওর।
চা খেয়ে গাড়ি স্টার্ট দিতে দিতে ছ’টা বেজে গেল। ডিসেম্বরের শেষ। বোলপুর পেরোতেই এমন ঘোর অন্ধকার দেখে মায়ের আঁচল চেপে ধরল টিপু। গাড়ি ছুটছে হু হু করে। ইলামবাজার জঙ্গলের মধ্যে কিছুটা এগোতেই জানা গেল, সামনে একটা বড় লরি অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে লরির মালপত্র। সব সাফ করে লরি সরিয়ে রাস্তা খুলতে ঘন্টা দু’য়েকও লেগে যেতে পারে। ঘন্টাখানেক পেরিয়ে গেল। ধৈর্য্যের বাঁধ যেন ক্রমশ ভেঙ্গে যাচ্ছে। অরুণবাবুরা দুর্গাপুর যাবেন শুনে এক লরিচালক পরামর্শ দিলেন, জঙ্গলের ভিতর দিয়ে একটা রাস্তা আছে। তেমন ভালো নয়। গাড়ির গতি বাড়ানো যাবে না। সেটা ধরে অজয়ের ব্রিজের আগে মেন রাস্তায় ওঠা যাবে। উপায় নেই দেখে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে মোবাইলের জিপিএস অন করে গাড়ি ঘুরিয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়লেন অরুণবাবু। অন্ধকার মোরামের খানাখন্দে ভরা অপরিচিত রাস্তা দিয়ে ধীরে ধীরে এগোচ্ছিলেন অরুণবাবু। সেই রাস্তা দিয়েই অবশ্য পাশ দিয়ে দু’একটা গাড়ি ওভারটেক করে বেরিয়ে যাচ্ছে। গাড়ির হেডলাইটের আলোয় জঙ্গলের মধ্যে দু’একটা শিয়ালের চোখ জ্বল জ্বল করে উঠছে। টিপু ভয় পেয়ে জড়িয়ে ধরছে মাকে। হঠাৎ মোবাইলের সিগন্যাল চলে গেল। জিপিএস বন্ধ। পুতুলকে সে কথা না জানিয়েই গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন অরুণবাবু। এবার কেমন যেন তাঁরও ভয় ভয় করতে লাগল।
রাস্তা যেন আর শেষ হয় না। হেডলাইটের আলোয় গাড়ির আশপাশে যেটুকু যা নজরে আসছে। তারপর শুধুই ঘন অন্ধকার। হঠাৎ জঙ্গল শেষ হয়ে সর্ষে খেত দেখা গেল রাস্তার পাশে। আকাশে শুক্লপক্ষের চাঁদের আলো এবার এসে পড়ছে আশপাশে। আর কিছুটা এগোলেই নিশ্চয়ই পিচ রাস্তা! অরুণবাবু কিছুটা যেন আশ্বস্ত হলেন। কিন্তু সামনে কালো পাহাড়ের মতো ওগুলো কি? হাতিদের একটা দল। তিনটি রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে আছে। বাকি তিনটি খেতের মধ্যে। এবার কি করা যায়? টিপু ও পুতুলকে চুপ করে বসে থাকতে বলে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করলেন অরুণবাবু। টিপু হাতি দেখতে চেয়েছিল। তাবলে এই রাতে এমন অচেনা পরিবেশে! শীতেও অরুণবাবু ঘামছেন। টিপু কিন্তু হাঁ করে চাঁদের আলোয় হাতি দেখছে। হঠাৎ পিছন দিকে থেকে একদল মানুষ মুখে আওয়াজ করতে করতে হাতে মশাল নিয়ে তাঁদের গাড়ির কাছাকাছি এসে পড়ল। অরুণবাবু গাড়ি থেকে নেমে সব বললেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন টিপুদের নিয়ে খেতের আল ধরে জঙ্গলের মাঝে একটি পাড়ায় নিয়ে গেলেন। বাড়ির চেহারা দেখেই টিপু বুঝল, তারা এখন আদিবাসীদের গ্রামে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হল আসল ঘটনা। টিন বাজানোর একটা আওয়াজ আসছিল। হঠাত্ হুড়মুড় করে কিছু পড়ার আওয়াজ শোনা গেল। জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে টিপু বুঝতে পারল, একটা গোলপাতার বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়েছে হাতির তাণ্ডবে। ব্যাস! পাড়ার মেয়েরাও এবার হই হই করে মশাল নিয়ে ছুটে এল। তাড়া খেয়ে হাতি আবার জঙ্গলে চলে গেল। এবার বড় কোনও গাড়ি আসার আওয়াজ এবং সঙ্গে সঙ্গে সার্চলাইটের আলো পড়ল উঠোনে। জানা গেল, ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে এক অফিসার ও ৫ জন কর্মী এসেছেন হাতির খোঁজে। তাঁরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বললেন। কিছুক্ষণ পর খবর এল, হাতিগুলি জঙ্গলের অন্যদিকে আছে। পাড়ার পুরুষরা মশাল নিয়ে পাহারায় আছে যাতে এ’দিকটায় তারা না আসে। এ’বার গ্রামের মোড়ল দুখীরাম কিস্কু এলেন। পরনে লুঙ্গি, এত ঠান্ডাতেও একটা উলের চাদর ছাড়া আর কিছু নেই শরীরে। রাত প্রায় সাড়ে ১১ টা। একটা তক্তায় বসে অরুণবাবু। টিপু মায়ের গা ঘেঁসে মাদুরে বসে আছে। দুখীরাম অরুণবাবুকে বললেন, ‘আপনাদের মুখ দেখে মনে হচ্ছে, বহুক্ষণ কিছু খাওয়া হয়নি। অল্প আয়োজন করেছি। একটু খেয়ে নিন।’ দুখীরামের ছেলের বউ সুখী তিনটি জামবাটিতে করে গরম দুধ নিয়ে এল। তার ৯ বছরের মেয়ে তিনটি বাটিতে করে চিঁড়ে আর আখের গুড় এনে দিল। এমনিতে দুধ দেখলে টিপুর বমি পায়। কিন্তু এখন চোখের সামনে খাবার দেখে খিদে যেন কয়েকগুণ বেড়ে গেল। মা দুধ, গুড় দিয়ে চিঁড়ে মেখে দিতেই তৃপ্তি করে তা শেষ করল সে। পুতুল কিছুটা নিশ্চিন্ত হলেন। ততক্ষণে পাড়ার খুদেরা দরজা দিয়ে উঁকিঝুঁকি মারতে শুরু করেছে।
অরুণবাবুরা কিভাবে এখানে এসে পড়লেন সব মন দিয়ে শুনলেন মাঝবয়েসী মোড়ল দুখীরাম। বললেন, ‘আপনারা সামান্য ভুল পথে এসে পড়েছেন। সকালে আমার ছেলেরা আপনাদের ঠিক রাস্তায় পৌঁছে দেবে। ততক্ষণ একটু বিশ্রাম করে নিন।’ অরুণবাবু বললেন, ‘না না, আমরা থাকলে আপনারা থাকবেন কোথায়?’ দুখীরাম বললেন, ‘আমাদের রাতে ঘুমোনো যাবে না। ফরেস্টের বাবুরা আসবে। আমাদের জেগে থাকতে হবে। যে কোনও সময় হাতিরা আবার এদিকে চলে আসতে পারে।’ অরুণবাবু বললেন, ‘তাহলে আমরাও আপনাদের সঙ্গে আজকের রাতটা গল্প করেই কাটাই।’ নানান রকম বিষয় নিয়ে কথা শুরু হল। হ্যারিকেনের আলো দেখে টিপু প্রশ্ন করল, ‘এখনও কারেন্ট আসেনি এখানে?’ মোড়ল বললেন, ‘আলো এসেছে। হাতির দলটা দু’দিন ধরে আশেপাশেই আছে। হাতির ধাক্কায় একটা খুঁটি উল্টে গিয়ে তার ছিঁড়েছে। মেরামতি হলেই আলো চলে আসবে।’ কথা বলতে বলতে অরুণবাবুরা জানতে পারলেন, মোড়লের নাতনি দুলু পাশের একটি প্রাইমারি স্কুলে ক্লাস ফোরে পড়ে। ক্লাস সিক্সে অজয়ের ওপাড়ে রঘুনাথপুরের একলব্য স্কুলের হস্টেলে চলে যাবে। সেখানেই টুয়েলভ পর্যন্ত পড়বে। এখানকার ছেলে-মেয়েদের অনেকেই ওই হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করে। অরুণবাবু ও পুতুল খুব খুশী হলেন।
গল্প করতে করতে কখন সময় পেরিয়ে গিয়েছে কারওরই খেয়াল নেই। ফরেস্টের অফিসার শিকদারবাবু এসে ডাকতেই সকলে বাইরে বেরিয়ে এলেন। অরুণবাবু মোড়লকে জড়িয়ে ধরে কৃতজ্ঞতা জানালেন। টিপুরা সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে গাড়িতে গিয়ে উঠল। গাড়ি যেতে যেতে বার বার পিছনের দিকে তাকিয়ে টিপুরা দেখতে পেল, লন্ঠন হাতে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় গোটা আদিবাসী পাড়া। দুর্গাপুর পর্যন্ত বার বার মনে পড়েছে মধ্যরাতে আদিবাসীদের গ্রামের সেই আতিথেয়তার কথাই।
সামনে ফরেস্টের গাড়ি। পিছনে টিপুরা। ইলামবাজার ব্রিজে পৌঁছে দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে গেলেন শিকদারবাবুরা। যাওয়ার আগে জানিয়ে গেলেন, দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারে মাঙ্গলিক লজে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা আছে। ‘কাল দুপুরে দুর্গাপুরে ফরেস্ট অফিসারদের একটি সম্মেলনে যাওয়ার কথা আছে। দেখা হতে পারে, বলে গেলেন শিকদারবাবু। দুর্গাপুর পৌঁছে লজের বিছানায় ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দিতে দিতে প্রায় ভোর হয়ে গেল। বেলা করে উঠে ব্রেকফাস্ট সেরে দুর্গাপুর ঘুরতে বেরিয়ে গেল টিপুরা। বিকালে শিকদারবাবুর সঙ্গে আর এক প্রস্ত দেখাও হয়ে গেল। গড় পঞ্চকোটের প্ল্যান ক্যানসেল করে সন্ধ্যায় টিপুদের গাড়ি রওনা দিল কলকাতার উদ্দেশ্যে। কোনও খেদ নেই টিপুর মনে।
পানাগড় বাইপাশের ঝাঁ চকচকে রাস্তা ধরে ঝড়ের বেগে এগিয়ে চলেছে অরুণবাবুর গাড়ি। টিপু ভাবছে, ফের যদি হাতির পাল রাস্তা আটকে দাঁড়ায়!
+ There are no comments
Add yours