একটি স্টেশন থেকে দিনে রেলের আয় গড়ে মাত্র ২০ টাকা। অথচ ওই স্টেশন দিয়ে ট্রেন চালাতে মাসে খরচ হয় প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। অবাক হবেন না। এটা রেল থেকেই পাওয়া তথ্য!
ওড়িশার বিচ্ছুপালি স্টেশন। বিচ্ছুপালি-বালাঙ্গির রুটের প্রান্তিক স্টেশন এটি। রেললাইন পাতা, স্টেশন নির্মাণ সহ অন্যান্য পরিকাঠামো গড়তে ব্যয় হয়েছে মোট প্রায় ১১৫ কোটি টাকা। একজন স্টেশন মাস্টার, অ্যাসিস্ট্যান্ট স্টেশন মাস্টার ও দু’জন ক্লারিক্যাল স্টাফ রয়েছেন স্টেশনে। ওই স্টেশন দিয়ে ট্রেন চালাতে রেলের মাসে খরচ হয় গড়ে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। কিন্তু আয়? দিনে কুড়ি টাকা অর্থাৎ মাসে মাত্র ছয়শো টাকা। এসবই জানা গিয়েছে ইস্ট কোস্ট রেলওয়ের কাছে হেমন্ত পান্ডা নামে এক ব্যক্তির করা আরটিআই থেকে। খবরটি প্রকাশিত হয়েছে দেশের একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমে।
বিচ্ছুপালি ও বালাঙ্গিরের মধ্যে দিনে দু’বার ট্রেন চলাচল করে। তিন কামরার দুটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন বিচ্ছুপালি ও বালাঙ্গিরের মধ্যে চলাচল করে সকালে ও দুপুরে। বালাঙ্গির থেকে মাত্র ১৫ কিমি দূরের ছোট্ট একটি গ্রাম হল বিচ্ছুপালি। বছরখানেক আগে ওই রেললাইনের উদ্বোধন হয়। শুরু হয় ট্রেন চলাচল। কিন্তু যাত্রী নেই। রেলের এক কর্তা জানিয়েছেন, বালাঙ্গির থেকে খুরদা পুরো ট্রেন চালু হয়ে গেলে পরিস্থিতি বদলাবে। তখন যাত্রী বাড়বে। তাছাড়া সম্বলপুর ও টিটলাগড়ের মধ্যে ডবল লাইন চালু হয়ে গেলেও প্যাসেঞ্জার ট্রেন বালাঙ্গির থেকে সম্বলপুর পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। এর ফলেও যাত্রী বাড়তে পারে বিচ্ছুপালি-বালাঙ্গির রুটে।
ওই রেলকর্তার মতে, বিচ্ছুপালি একটি ছোট্ট গ্রাম। সেখান থেকে যাত্রীর প্রত্যাশা করা যায় না। বালাঙ্গিরের বাইরের এই ছোট্ট গ্রামের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি একদিন রেললাইন ও প্রান্তিক স্টেশনের কারণে বদলে যাবে।
রেল জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই স্টেশন থেকে আয়ের দিকে তাকানোর সুযোগ নেই। পুরো রুটের সামান্য একটা অংশ হল বালাঙ্গির-বিচ্ছুপালি। পুরো রুটে ট্রেন চালু হলে পরিস্থিতি বদলে যাবে বলে আশা। তবে এই পরিস্থিতিতেও বালাঙ্গির-বিচ্ছুপালি রুটে ট্রেন বন্ধ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ, রেললাইন ব্যবহারযোগ্য করে রাখার জন্যই দিনে দু’বার ওই লাইনে ট্রেন চালাতে হচ্ছে রেলকে। তাই দিনে কুড়ি টাকা রোজগার না হলেও ট্রেন চলবে ওই লাইনে।
+ There are no comments
Add yours