করোনা ভাইরাস নিয়ে ভয়াবহ আতঙ্কের মধ্যেও আশার আলো দেখা গিয়েছে চিনের দূষণ কমায়। শিল্পোৎপাদন এবং রাস্তায় যানবাহন প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই ছবি ধরা পড়েছে নাসার স্যাটেলাইট ছবিতে। ঠিক তেমনই, দিল্লির সাম্প্রতিক হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। আতঙ্কিত হাজার হাজার মানুষ। তবু সেই হিংসাই যেন বিবেকের বন্ধ দরজা খুলে দিল দুই সম্প্রদায়ের মনে। উত্তরপ্রদেশের সাহারণপুর এলাকার একটি জমি নিয়ে শিখ ও মুসলিমদের দীর্ঘ দশ বছরের বিবাদ মিটিয়ে দিতে পেরেছে।
খবরে প্রকাশ, ২০১৪ সালে ওই জমি নিয়ে সংঘর্ষের জেরে প্রাণ গিয়েছিল তিনজনের। জখম হয়েছিলেন ৩৩ জন। সাহারনপুর রেল স্টেশন সংলগ্ন একটি গুরুদোয়ারা সংলগ্ন জমি নিয়ে বিবাদ শুরু হয় ২০১০ সালে। গুরুদোয়ারাটি বড় করার জন্য জমি কেনেন গুরুদোয়ার কমিটি। সেই জমিতে থাকা পুরনো ইমারতগুলি ভেঙে দেওয়া হয়। অভিযোগ, সেগুলির মধ্যে ছিল একটি দীর্ঘদিনের পুরনো মসজিদ। তা থেকেই সংঘর্ষ। মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দূরত্ব দিন দিন বাড়তেই থাকে।
সেই বিবাদ এবার মিটতে চলেছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে মৌজপুর, চাঁদবাগ, জাফরাবাদের মতো জায়গায় যেভাবে মুসলিম পড়শিদের পাশে সেখানকার শিখরা দাঁড়িয়েছেন, যেভাবে হামলাকারীদের কাছ থেকে আগলে রেখেছেন তা দেখে আপ্লুত সাহারণপুরের মুসলিমরা। সুপ্রিম কোর্টে মুসলিম পক্ষের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দিল্লির হিংসায় শিখরা যে ভাবে মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেজন্য ধন্যবাদ জানাতে চান তাঁরা। তাই জমির দাবি তাঁরা ছেড়ে দিতে চান। তাঁদের তরফের আইনজীবিও আদালতে জানিয়ে দিয়েছেন, মানবতার নিদর্শন রেখেছেন শিখরা। অসহায় মানুষের পাশে তাঁরা দাঁড়িয়েছেন। তাই সাহারণপুরে বিদ্বেষ জিইয়ে থাকুক তা তাঁরা চান না।
সাহারণপুরের মুসলিমরা জানিয়ে দিয়েছেন, জমির দাবি তাঁরা ছেড়ে দিচ্ছেন। অন্য জায়গায় মসজিদ গড়া হবে। আর সেজন্য অর্থসাহায্য করবে গুরুদোয়ার কমিটি। গুরুদোয়ারার এক কিলোমিটারের মধ্যেই সেজন্য জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। শিখরা হাত লাগিয়েছেন মসজিদ গড়ার কাজে। অন্যদিকে মুসলিমরা নতুন গুরুদোয়ারা গড়ে তোলার জন্য শিখদের করসেবায় যোগ দিচ্ছেন।
দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সেতুবন্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। সম্প্রীতির এই নিদর্শন দেখে তাই খুশি তাঁরাও।
+ There are no comments
Add yours