গরমে তেলের ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ, প্যারাসিটামল থেকে মৃত্যু, আরও কত কি!

সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মেসেজ দেখছেন। কিন্তু বিশ্বাস করার আগে যতটা সম্ভব যাচাই করে নেওয়া জরুরি। কেন? দুটি উদাহরণ থাকল এই প্রতিবেদনে।

শীত তো শেষ হতে চলল। এবার ধীরে ধীরে তাপমাত্রার পারদ উঠতেই থাকবে। তারপর ভাইরাল হবে একটি মেসেজ, ‘গরমে ফুল ট্যাঙ্ক তেল ভরলেই গাড়িতে বিস্ফোরণ হবে। তাই ট্যাঙ্ক কিছুটা খালি রেখে তেল ভরুন।’ ইন্ডিয়ান অয়েলের নাম করে এই মেসেজ ছড়ানো হয়। অথচ সত্যিটা কি জানেন?

গত দু’বছর ধরে গরমে হোয়াটসঅ্যাপে ইন্ডিয়ান অয়েলের লোগো সহ একটি বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ছে, গরমে নাকি গাড়ি ফুল ট্যাঙ্ক তেল ভরলেই বিস্ফোরণের আশঙ্কা বয়ে আনে। যে কোনও সময় ঘটতে পারে বিপদ। হিন্দিতে লেখা ওই মেসেজে আরও জানানো হয়েছে, ট্যাঙ্ক অর্ধেক ভর্তি করুন যাতে বায়ু চলাচল করতে পারে। দিনে একবার তেলের ট্যাঙ্ক খুলে রাখুন।

অথচ সত্যিটা হল, ইন্ডিয়ান অয়েল তো এই মেসেজ দেয়নি। বরং এই মেসেজের কোনও ভিত্তিই নেই। ২০১৮ সালের জুনে বাধ্য হয়ে ইন্ডিয়ান অয়েল ট্যুইট করে জানায়, এমন কোনও আশঙ্কার কথা তারা জানায়নি। এটি ভুয়ো তথ্য। এমন কোনও সতর্কবার্তা জারি করা হয়নি। বাস্তবে এমন কিছু হয় না। কারণ অটোমোবাইল কোম্পানিগুলি গাড়ির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেই ব্যবস্থা নেয়। কোনও কোম্পানি কখনও বলেনি, ট্যাঙ্ক সম্পূর্ণ ভর্তি করা যাবে না।

বুঝুন তাহলে!

প্যারাসিটামল আমার-আপনার খুব পরিচিত ওষুধ। মাঝে মাঝেই আমরা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই প্যারাসিটামল খেয়ে নিই, যদিও তা একেবারেই উচিত নয়। সে যাই হোক, প্যারাসিটামল P-500 ট্যাবলেট খাওয়ার পরে কিভাবে সারা শরীর লাল রঙের ক্ষতে ভরে গিয়েছে, কিভাবে মৃত্যু ডেকে এনেছে, সেই মেসেজ নিশ্চয়ই আপনি দেখে থাকবেন। তারপর থেকেই প্যারাসিটামল খাওয়ার সময় চোখ বড় বড় করে দেখে নিয়েছেন, আদৌ প্যারাসিটামল P-500 নয় তো?

জেনে রাখুন, এমন মেসেজ ২০১৭ সালে ছড়িয়েছিল সিঙ্গাপুরেও। সেখানকার স্বাস্থ্য দফতর থেকে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে নির্দেশিকা জারি করা হয়। জানানো হয়, এই খবরের কোনও ভিত্তি নেই। প্যারাসিটামল P-500 খেয়ে কারওর আক্রান্ত হওয়ার খবর নেই। আর এই ওষুধে এমন কিছু নেই, যাতে বিপদ হতে পারে।

ভাবুন, ওষুধ নিয়েও ছেলেখ‌েলা চলে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শেয়ার আর ফরোয়ার্ড হতে হতে চলে যায় হাজার হাজার মানুষের হাতে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগে না। তাই আবারও বলছি, মেসেজে কোনও কিছু অস্বাভাবিক মনে হলেই তা যাচাই করার চেষ্টা করুন। সত্যিটা জানুন। তারপরেই অন্যদের ফরোয়ার্ড করুন। তাতেই সবার মঙ্গল হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *