How to grow Allamanda indoors

How to grow Allamanda indoors. অ্যালামুন্ডার যত্ন

How to grow Allamanda indoors. এই বিষয়ে থাকছে কিছু আকর্ষণীয় টিপস।

জানেন কি, Allamanda ইংরেজি নাম হলেও বাংলায় এর একটি মিষ্টি নাম আছে? সেটি হল অলকানন্দা। ইংরেজিতে বলা হয় Golden Trumpet বা Yellow Bell । আদি নিবাস ব্রাজিল। আয়তনে কলকের চেয়ে বড়। উজ্জ্বল হলুদ রঙের ফুল হল অ্যালামুন্ডা বা অলকানন্দা। সারা গ্রীষ্ম ও বর্ষাকাল ধরে ফোটে। গরমের মরসুম থেকে শীতের আগে পর্যন্ত অল্প যত্ন নিলেই এই গাছ ফুলে ভরে যায়। শাখা ও দাবা কলমের সাহায্যে এই ফুল গাছের বংশবিস্তার হয়। টব ভর্তি প্রচুর ফুল পেতে এলামুন্ডা গাছের পরিচর্যা কীভাবে করবেন, জেনে নেওয়া যাক।

How to grow Allamanda indoors. আসুন দেখি, কিভাবে যত্ন নেবেন অ্যালামুন্ডার।

এই গাছ দু’ধরণের হয়। একটা ঝোপ ধরণের। অন্যটা লতানো। লতানো গাছের ফুল আকারে একটু বড় হয়। আমার অবশ্য লতানো গাছটি বেশি পছন্দের। কারণ, ব্যালকনির শোভা বাড়াতে এই সবুজ গাছটির জুড়ি মেলা ভার। তবে দুটি গাছের একই রকম যত্ন করতে হয়। প্রচুর ফুল পেতে গেলে চারা গাছ রোপণের পূর্বে সঠিক জায়গা ও মাটি নির্বাচন করতে হবে। সরাসরি মাটিতে প্রতিস্থাপন করলে ঢালু স্থান নির্বাচন করতে হবে যাতে জল না দাঁড়ায়। প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা সূর্যের আলো পায় তেমন স্থান নির্বাচন করতে হবে। এতে গাছ ভাল বাড়বে। রোগে আক্রান্ত হবে না।

মাটি তৈরি

রোদ এই গাছ পছন্দ করে। ছায়াযুক্ত স্যাঁতসেঁতে জায়গায় গাছ ভালো হয় না। ফুলের রংও ভালো হয় না। মাটি তৈরির সময় খেয়াল রাখতে হবে, জল যেন মাটিতে না জমে। সেই জন্য মাটিতে বালির ভাগ বেশী হলেই ভালো।

মাটি তৈরি করতে যা লাগবে- বাগানের মাটি এক ভাগ, বালি এক ভাগ, জৈব সার এক ভাগ এবং এক ভাগ কোকোপিট। এছাড়া আধ মুঠো হাড়গুঁড়ো, আধ মুঠো শিং কুচি, দু’চামচ নিম খোল। এই মিশ্রণ ভালো করে তৈরি করে নিতে হবে। গাছটিকে সরাসরি মাটিতে প্রতিস্থাপন করতে চাইলে, প্রতিস্থাপন এর আগে মাটি ভাল ভাবে খুঁড়ে নিতে হবে এবং উপরে উল্লিখিত উপাদানগুলি পরিমাণ মত দিতে হবে। এরপর দিন পনেরো অপেক্ষা করতে হবে। তারপর গাছ প্রতিস্থাপন করতে হবে।

টব তৈরি

যে কোনও গাছের ক্ষেত্রে টবে ড্রেন তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। টবে যে ছিদ্র আছে তার ওপর টবের ছোট্ট ভাঙা অংশ দাও বন্ধুরা। তার উপরে চিপ স্টোন দিতে হবে অল্প করে। তার উপরে বালি দাও। এরপর কিছুটা মাটি দিয়ে চারা গাছ বসাও। তারপর বাকি মাটি দিয়ে দাও। এরপর ঝাঁঝরি করে জল দাও। প্রথম দু’তিন দিন ছায়ায় রাখতে হবে। গাছ সতেজ হলে পছন্দের জায়গায় রেখে দাও। রৌদ্রের গাছ হলেও সেমি সেডেও এই গাছ ভালো হয়।

মনে রাখতে হবে, অ্যালামুন্ডা একটি স্থায়ী ও শক্তপোক্ত গাছ। তাই বড় টব নির্বাচন করতে পারলেই ভাল। সেজন্য ১০ ইঞ্চি বা ১২ ইঞ্চি টব সংগ্রহ করতে হবে। প্লাস্টিকের টব না নেওয়াই ভাল। কারণ, তাতে জল নিকাশি ব্যবস্থা ভাল হয় না। মাটির টবে গাছ প্রতিস্থাপনের আগে জল যাতে জমতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য টবের নীচে ফুটো করে জলনিকাশির ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে। 

 

Buy BEST Plant Cutting Scissors hereঅ্যালামুন্ডার ডাল ছাঁটার সেরা কাঁচি

স্থান নির্বাচন

অ্যালামুন্ডা গাছ রোদ পছন্দ করে। তাই যেখানে দিনে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা সরাসরি সূর্যের আলো আসে, তেমন স্থানে টব রাখতে হবে। ব‍্যালকনিতে রাখতে গেলে দেখতে হবে ব্যালকনির কোন জায়গায় রোদ আসে। সেখানেই টব রাখতে হবে। সঠিক রোদ পেলেই গাছ বেড়ে উঠবে তড় তড় করে।

জল প্রয়োগ

অ্যালামুন্ডা গাছ খুব জল টানে। তাই বিশেষ করে টবে অ্যালামুন্ডা গাছ লাগালে জলের চাহিদা পূরণের জন্য সতর্ক থাকতে হবে। কারণ,  জলের অভাব হলেই গাছের ফুল শুকিয়ে যায় বা কুঁড়ি গাছ থেকে ঝড়ে পাড়ে। পাতাও ঝরে পড়তে শুরু করে। গরমকালে নিয়ম করে প্রতিদিন দু’বেলা গাছের গোড়ায় জল দিতে হবে। তাপমাত্রা খুব বেড়ে গেলে তখন প্রতিদিন সূর্য্য ডোবার কিছুক্ষণ পরে সাওয়ার দিয়ে গাছকে স্নান করিয়ে দিতে হবে।

গাছের খাবার

শীতে এই গাছের বিশেষ খাবারের দরকার পড়ে না। তবে গরমের শুরুতেই উপযুক্ত খাবার না দিলে সমস্যা হবে। কারণ, এই সময় গাছে কুঁড়ি আসতে থাকে। এক চামচ এনপিকে এক মগ জলে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে উঠে দিতে হবে গাছের গোড়া থেকে কিছুটা দূরে। কারণ জলে দ্রবীভূত খাদ্য এই গাছ পছন্দ করে। এছাড়াও এক চামচ সরষের খোল,  এক চামচ হাড় গুঁড়ো দিতে হবে একমাস অন্তর। তবেই গাছ সতেজ হবে। গাছের স্বাস্থ্য ভালো হবে। সঠিক যত্ন এবং পরিচর্যা করলে টানা বর্ষা পর্যন্ত এই গাছ থেকে ফুল পাওয়া যায়। প্রতিনিয়ত গাছে ফুল পেতে চাইলে প্রতি ১৫ দিনে একবার করে গাছে অল্প পরিমাণে সার প্রয়োগ করতে হবে। গাছের গোড়ার মাটি শক্ত হয়ে গেলে মাসে একবার করে কুঁড়ে ঝুরঝুরে করে দিতে যাতে মাটিতে বাতাসের পরিমাণ বাড়ে। এতে গাছের বৃদ্ধি ভাল হবে।

রোগ

এই গাছের বড় সমস্যা হল, কান্ড সবুজ থাকলেও পাতা হলুদ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ১০ টি জং ধরা পেরেক এক মগ জলে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে সেই জল গাছের গোড়ায় ঢেলে দিতে হবে। তাহলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ফুল আসবে গাছ ভরে। সাধারণত অ্যালামুন্ডা গাছে তেমন একটা পোকামাকড়ের প্রকোপ দেখা যায় না। তবু ১৫ দিন অন্তর নিম অয়েল (Neem Oil) জলে মিশিয়ে সন্ধ্যার সময় স্প্রে করবেন। তাছাড়া গাছের গোড়ায় শুকনো নিমপাতা অথবা নিম খোল দিলে কীটপতঙ্গ পালায়।

বর্ষার সময়ে গাছের অগ্রভাগের কচি কান্ডে এবং পাতায় পচন ধরে। তখন প্রতি ১৫ দিন অন্তর যে কোনও কোম্পানির ফাঙ্গিসাইড জলের সাথে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। পোকা-মাকড়ের উপদ্রব বেশি হলে তখন কীটনাশক ব্যবহার করা ছাড়া উপায় থাকে না। সেক্ষেত্রে ডাইমেথয়েড ৩০ শতাংশ কম্পোজিসন এক লিটার জলে ৩০ ফোঁটা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে স্প্রে করলে পোকার আক্রমণ থেকে রেহাই মিলবে। 

How to grow Allamanda indoors. আশা করি এতক্ষণে একটা স্পষ্ট ধারণা পেয়ে গিয়েছেন আপনি। এছাড়াও আরও কিছু এমন ধরণের গাছ রয়েছে যা আপনি বাড়িতে লাগাতে পারেন। কাজ থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে দেখলেন বাড়ির দরজার কাঠামো ঘিরে ফুটে রয়েছে একগোছা মাধবীলতা। বা হয়তো বুগেনভিলিয়া বা কাগজফুল। যাঁরা গাছ ভালবাসেন, তাঁদের মধ্যে বুগেনভিলিয়ার প্রেমে পড়েননি, এমন মানুষ কমই আছেন। আবার, ঘুম ভাঙতেই কফির কাপ হাতে নিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছেন। হঠাৎই চোখ চলে গেল ছোট ছোট বেগনি রঙের মর্নিং গ্লোরি ফুলের দিকে। বা ব্লিডিং হার্ট! সাদা রঙের আবরণের মধ্যে থেকে রক্তবর্ণের পাপড়িগুলি দেখলে মনে হয় যেন সত্যিই যেন হৃদয় থেকে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত চুঁইয়ে পড়ছে! লাগাতে পারেন লতানো জুঁই। জুঁই ফুল সাধারণত বর্ষাকালে বেশি ফোটে। মাটিতে একটু জল আর সার দিলেই গাছ বেড়ে উঠবে। বাড়ির পাঁচিল ভরিয়ে রাখবে ফুলে। লাগাতে পারেন ফ্লেম ভাইন। ট্রাম্পেটের মতো দেখতে এই ফুলগুলি ফুটে থাকে গোছা ভরে। 

আশা করি এই প্রতিবেদনটি আপনাদের কাজে আসবে। যদি কিছু প্রশ্ন থাকে জানাবেন। চেষ্টা করব সেই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করে আপনাদের জানাতে। ধন্যবাদ। 

দেখুন শিক্ষক কিভাবে নিজের বাড়িকে করে তুলেছেন কুঞ্জ, শিখুন বাগান তৈরি

আরও পড়ুন- কিভাবে খুব সহজে টবে ডালিয়া চাষ করবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *