How to grow Hibiscus.

How to grow Hibiscus. জবা গাছের পরিচর্যা

How to grow Hibiscus. কীভাবে জবা গাছের পরিচর্যা করতে হবে সেটা তো বলবই। পাশাপাশি যাঁরা ফ্ল্য়াটে বসবাস করেন তাঁরা কীভাবে টবে জবা গাছ লাগিয়ে ফুল পাবেন সেটাও বলব।

How to grow Hibiscus. কীভাবে শুরু করবেন জবা গাছের পরিচর্যা

লাল জবার গাছ সব বাড়িতেই দেখা যায়। এটি সাধারণ জবা গাছ। বয়স বাড়লে টবে মেনটেন করা যায় না বলে অনেকেই মনে করেন। কিন্তু সেই ধারণা ঠিক নয়। সে’কথাই বলব আজ। সঠিক যত্নে পুরানো গাছেও আসবে অনেক কুঁড়ি। তাই গাছ বসানোর সময়ে মাটি তৈরী করতে হবে নির্দিষ্ট উপকরণ দিয়ে। আর বন্ধুরা, গাছে ফুল আনতে দরকার গাছের যত্ন। গাছ লাগানো থেকে গাছে খাবার দেওয়া, সবেতেই প্রয়োজন যত্ন। জবা গাছ ভালভাবে বেড়ে উঠতে প্রচুর সূর্যালোক এবং উষ্ণতার প্রয়োজন। তাই আপনার বাগানে এমন একটি জায়গা বেছে নিন যেখানে দিনে কমপক্ষে ছয় ঘন্টা সূর্যালোক পাওয়া যায়।

How to grow Hibiscus. তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছুই নেই। গাছের ডাল থেকে খুব সহজে চারা তৈরী করা যায়। ডাল কেটে মাটিতে বসিয়ে দিতে হবে। নিয়মিত জল দিলে গাছে ১০-১২ দিনের মধ্যে নতুন পাতা গজাবে। নতুন পাতা হওয়া মানেই চারাগাছ রেডি হওয়ার পথে। আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করুন। চারাগাছ রেডি। নতুবা, নার্সারি থেকে চারা গাছ এনেও লাগাতে পারেন। বাজারে কলমের জবা গাছও পাওয়া যায়। যে কোনও নার্সারিতে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। দিনে মোটামুটি ৬ থেকে ৮ ঘন্টা রোজ পায় তেমন জায়গায় জবা গাছ প্রতিস্থাপন করতে হবে। এতে গাছ ভাল বাড়বে। রোগে ভুগবে না। জমা গাছ সাধারণত, উর্বর দোঁয়াশ মাটি অথবা বেলে-দোঁয়াশ জাতীয় মাটিতে ভাল হয় কারণ এই ধরণের মাটিতে জল জমে না।

মাটি তৈরী

টবে জবা গাছের পরিচর্যা : গাছ কেমন হবে তা অনেকটাই নির্ভর করে মাটির উপর। বিশেষ করে গাছ টবে বড় হওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে খাদ্যের প্রয়োজন হয়। মাটি তৈরী করতে লাগবে একভাগ মাটি, এক ভাগ গোবর সার, একভাগ বালি, কোকোপিট এক ভাগ। উপাদানগুলি ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এতে দিতে হবে এক চা চামচ পটাশ। এছাড়া ৫০ গ্রাম হাড় গুঁড়ো এবং ৫০ গ্রাম শিং কুচি দিতে পারেন। এছাড়া এক চামচ সরিষার খোল ও এক চামচ নিম খোল দিতে পারেন। এই সব উপাদান গুলি ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার একটি ১০ ইঞ্চির টবে তা দিতে হবে। তবে বড় টবও নেওয়া যেতে পারে। টব নির্বাচন করবার সময় বেশি ছিদ্রযুক্ত মাটির টব নেবেন। তাতে ড্রেনেজ সিস্টেম ভাল হবে। গাছ বড় হলে আরও বড় টবে প্রতিস্থাপন করতে পারেন।

টব তৈরী

অবশ্যই মাটির টব ব্যবহার করবেন। যে কোনও গাছের ক্ষেত্রে টবে ড্রেন তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। টবে যে ছিদ্র আছে তার ওপর টবের ছোট্ট ভাঙা অংশ দাও বন্ধুরা। তার উপরে চিপ স্টোন দিতে হবে অল্প করে। তার উপরে বালি দাও। এরপর কিছুটা মাটি দিয়ে চারা গাছ বসাও। তারপর বাকি মাটি দিয়ে দাও। এরপর ঝাঁঝরি করে জল দাও।

প্রথম দু’তিন দিন ছায়ায় রাখতে হবে। গাছ সতেজ হলে পছন্দের জায়গায় রৌদে রেখে দাও। বর্ষার পর টবের শেকড় ছাঁটাই করতে হবে ও মাটি বদলাতে হবে।

গাছের যত্ন

এই গাছ যেমন রোদ পছন্দ করে তেমনই ঠাণ্ডাও পছন্দ করে। তাই বেশী পরিমাণ ফুল পেতে দুবার, বিশেষত গ্রীষ্মের মাসগুলিতে সকালে ও বিকালে গাছে জল দিতে হবে। জল শিকড়গুলিতে পৌঁছেছে কী না তা নজর রাখতে হবে। তবে সতর্কতা অবলম্বন করুন যাতে, বেশি জল না যায়। তাহলে শিকড় পচে যেতে পারে। বিকেলে জল দেওয়ার সময় ঝাঁঝরি দিয়ে পুরো গাছ ধুয়ে দিতে হবে। তাতে গাছের পাতা যেমন সবুজ থাকে তেমনই কুঁড়ি আসে গাছ ভরে।

শীতকালে জবা গাছের পরিচর্যা :  টব সম্পূর্ণ সূর্যের আলোতে রাখতে হবে। গরমকালে দুপুরের তীব্র সূর্যের আলো যাতে সরাসরি না পায় তেমন স্থানে টব রাখতে হবে। জবা গাছের ডরম‍্যান্সি পিরিয়ড চলে জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময় গাছে খাবার না দিয়ে  শুধু জল দিতে হবে এবং প্রয়োজনমতো কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। ডরম‍্যান্সি পিরিয়ড শেষ হওয়ার কিছু দিন পরে গাছ ছেঁটে দিতে হবে। বর্ষাকালে খেয়াল রাখতে হবে যাতে টবে জল না জমে। টানা বৃষ্টি হলে টবটিকে গাছশুদ্ধ কাত করেও রেখে দিতে হবে।বর্ষার সময় কিছুদিন পর পর টবের মাটি একটু খুঁড়ে দিয়ে ফাঙ্গিসাইট ছিঁটিয়ে দিতে হবে। দরকার হলে ১০ থেকে ১২ দিন অন্তর অন্তর ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।

গাছের খাবার

জবা গাছে ফুল আসছে না : জবা গাছ সুস্থ রাখতে ও ফুল আসতে নিয়মিত সার দিতে হবে। জৈব সারের সঙ্গে রাসায়নিক সারও দেওয়া যেতে পারে। তবে টবে গাছ বসানোর ১ থেকে ২ মাসের মধ্য কোন জৈব বা রাসায়নিক সার ব্যাবহার না করাই ভাল। ভাল ফুল পেতে ১৫ দিন অন্তর ১ চামচ ইউরিয়া, ১ চামচ পটাশ, ১ চামচ ফসফেট গাছের গোড়া ছেড়ে সামান্য দূরে ছড়িয়ে দিতে হবে। জৈব সারের মধ্য কলার খোসা, ডিমের খোসা, হাঁড় গুড়ো, শিং কুঁচি , পাতাপচা সার প্রভৃতি ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার জৈব সারের পরিবর্তে NPK- ১৯:১৯:১৯ সার এক চামচ গোড়া থেকে দূরে টবের ধারে মাটিতে দিয়ে দিতে পারেন। নিয়মিত এভাবে মাসে একবার করে সার দিতে হবে। কারণ রাসায়নিক সার জলে ধুয়ে যায়। এছাড়াও ১ মাস অন্তর কেঁচো সার দিতে হবে। সার দেওয়ার আগের দিন মাটি কুঁড়ে দিতে হবে। এই ভাবে জবা গাছ সামান্য যত্নেই সারাবছর ফুলে ভরে থাকবে। সব ধরণের জবা গাছেই এইভাবেই পরিচর্যা করা যায়।

কীটনাশক

জবা ফুল গাছের পোকা দমন : মিলিবাগের (White insects/ Mealybug) আক্রমণ থেকে রুখতে ইমিডাক্লোরোপিড দিতে হবে। ১ লিটার জলে পাঁচ ফোঁটা মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে। ৫ দিন অন্তর ৭ বার স্প্রে করতে হবে। গাছে পিঁপড়ের আক্রমন হলে দানা বিষ ( Furadon Insecticide) আধ চামচ মাটির উপরে ছড়িয়ে জল ঢেলে দেবেন।

জবা গাছের রোগ : পাতা হলদে হয়ে যাওয়া ও কুঁকড়ে যাওয়া রোধ করতে Rolex, Oberon, Xmite এর মধ্যে যেকোনো একটির ২ ml এক লিটার জলে ভালো করে মিশিয়ে ১০/১২ দিন অন্তর অন্তর স্প্রে করতে হবে যতদিন না সমস্যা মিটছে।

জবা গাছে কুঁড়ি ঝরে যাওয়া : জবা গাছের পাতায় ১৫ দিন অন্তর Epsome Salt ( মেগ্নেসিয়ান সালফেট MgSo4) এক লিটার জলে এক চামচ মিশিয়ে স্প্রে করবেন। এছাড়া, মাসে একবার ১ লিটার জলে এক চামচ গুঁড়ো খোল ভাল ভাবে মিশিয়ে টবের মাটিতে দেবেন।

Buy BEST Plant Cutting Scissors hereজবা গাছের ডাল ছাঁটার সেরা কাঁচি

 

 জবা গাছের ডাল ছাঁটাই নিয়মিত ডাল ছাঁটাই গাছকে সুস্থ রাখতে এবং নতুন শাখা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শীতের শেষের দিকে বা বসন্তের শুরুতে ছাঁটাই করুন। মৃত বা ক্ষতিগ্রস্থ শাখাগুলিকে কেটে ফেলুন। এছাড়া পোকামাকড় এবং রোগ থেকে রক্ষা করতে নিয়মিত নজরদারি এবং প্রয়োজনে উপযুক্ত কীটনাশক বা ছত্রাকনাশক স্প্রে করুন। এই পদ্ধতিগুলি গ্রহণ করলে আশা করা যায় আপনার বাগানে একটি সতেজ জবা গাছ বেড়ে উঠবে এবং গাছ ভরে উঠবে ফুলে। আশা করি, উপরের প্রতিবেদন থেকে টবে জবা গাছ লাগানোর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য় পেয়েছেন। এখন সেগুলি কার্যকর করে দেখুন। এরপরেও আপনাদের যদি এই বিষয়ে কোনও প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই জানাবেন। সাধ্যমতো চেষ্টা করব সেই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে।

 

আরও পড়ুন- সজনে পাতার অলৌকিক উপকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *