শচীন ও গুরুপ্রসাদ

একজন মানুষ বিখ্যাত হওয়ার পিছনে বহু মানুষের অবদান থাকে। কিন্তু সেকথা স্বীকার করতে চান না অনেকেই। যাঁরা কিংবদন্তি, তাঁরাই পারেন তা স্বীকার করতে। যেমন শচীন রমেশ তেন্ডুলকর।

প্রায় উনিশ বছর আগে এক যুবকের পরামর্শ কাজে এসেছিল শচীনের। এতদিন পরেও তিনি তাঁর কথা ভোলেননি। তাঁকে খুঁজে পেতে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য চেয়েছেন লিটল মাস্টার। তাঁর সঙ্গে একবার দেখা করতে চান তিনি।

ঘটনাটি ঘটে ২০০১ সালে চেন্নাইয়ে। সেবার অস্ট্রেলিয়া দল এদেশে সফরে এসেছিল। টেস্ট ম্যাচ ছিল চেন্নাইয়ে। যে হোটেলে ভারতীয় দল উঠেছিল সেখানে নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন তামিলনাড়ুর পেরামবুরের বাসিন্দা গুরুপ্রসাদ। তিনি তখন ২৮ বছরের যুবক। বরাবর শচীনের অন্ধভক্ত। শচীনের প্রতিটি ইনিংস তো বটেই, তাঁর খেলা প্রতিটি বল তিনি বার বার দেখেন। সম্প্রতি শচীন টুইটারে জানান, সেই টেস্টে তিনি এলবো গার্ড পরে ব্যাট করছিলেন। সেই নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে এলবো গার্ড পরা নিয়ে কথা হয়। এরপর তিনি এলবো গার্ডের নকশাটা কিছুটা বদলে নেন।

সাধারণত কনুইয়ের চোট থেকে বাঁচতে ব্যাটসম্যানরা এলবো গার্ড পরেন। শচীনের অনুমতি নিয়ে ওই নিরাপত্তাকর্মী বলেন, ‘আমি দেখেছি, আপনি যখনই এলবো গার্ড ব্যবহার করেন, তখনই আপনার ব্যাটের সুইং বদলে যায়।’ তাঁর কথা শুনে শচীন অবাক হয়ে যান। এর আগে কেউ তাঁকে এ’বিষয়ে কিছু বলেননি। শচীন তাঁকে বলেন, ‘ঠিক বলেছো তুমি। তুমিই একমাত্র লোক যে, এটা বুঝতে পেরেছ। আর কেউ কখনও বিষয়টি বলেনি আমায়।’ এরপর মাঠ থেকে হোটেলে ফিরে শচীন এলবো গার্ডের নকশা বদলে মন দেন। সেই টেস্টে শচীন সেঞ্চুরি করেন। পরে অস্ট্রেলিয়াতে ডবল সেঞ্চুরিও করেন শচীন।

হোটেলের সেই নিরাপত্তাকর্মীর খোঁজে সম্প্রতি ভিডিও বার্তা টুইট করেন লিটল মাস্টার। সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে আবেদন করেন, তাঁকে খুঁজে বের করে দেওয়ার। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই খোঁজ মেলে গুরুপ্রসাদের। এখন তাঁর বয়স ৪৭ বছর। তিনি সব জেনে অবাক হয়ে যান। শচীন এখনও তাঁর কথা মনে রেখেছেন! হোটেলের লবিতে সই নিতে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই শচীনের অনুমতি নিয়ে এলবো গার্ডের বিষয়টি তিনি বলেছিলেন। এতদিন পরেও শচীন সব মনে রেখেছেন জেনে আপ্লুত হয়ে যান গুরুপ্রসাদ।

কিংবদন্তিরা আসলে এমনই হন! (PIX- FACEBOOK)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *