চোখের পলকে সাপ ধরেন দুর্গাপুরের স্নেক ক্যাচার দেবাশিস
রবিবারের সকাল। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে আগাছার জঙ্গল পরিস্কার করতে গিয়ে লম্বা একটি পাইথন দেখে সভয়ে পিছিয়ে গেলেন হাসপাতালের কর্মীরা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাসপাতালে পৌঁছে যান দুর্গাপুরের প্রখ্যাত স্নেক ক্যাচার দেবাশিস মজুমদার। আঁকসি দিয়ে পাইথনটিকে পাকড়ে বস্তাবন্দী করে ফেলেন দ্রুত।
দেখুন সেই ভিডিও
লকডাউনে পরিবেশ আগের থেকে অনেক শান্ত হয়ে যাওয়ায়, দূষণ কমে যাওয়ায় সাপ বেরোচ্ছে সব জায়গাতেই। নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারাদিন তাঁকে সাপ ধরে বেড়াতে হচ্ছে বলে জানান দেবাশিসবাবু। তিনি জানান, শনিবার ১২ সেপ্টেম্বর তিনি সারা দিনে মোট ৯ টি সাপ ধরেছেন।
দেবাশিসবাবুর বাড়ি দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপ। ছোটবেলায় রাস্তায় পড়ে থাকা জখম কাঠবিড়ালী হোক বা পাখি, বাড়িতে এনে সুস্থ করে তুলে জঙ্গলে ফিরিয়ে দিতেন। স্কুলে পড়তে পড়তে একবার হেলে সাপ বেরিয়েছিল স্কুলে। সহপাঠীরা ঠিক করেছিল, সেটিকে মেরে ফেলা হবে। কিন্তু দেবাশিসবাবু সেটিকে ধরে জঙ্গলে ছেড়ে দেন। বড় হয়ে নিয়মিত সাপ ধরতে শুরু করেন তিনি।
যত দিন গিয়েছে অভিজ্ঞতা বেড়েছে। কোবরা, কেউটে, গোখরো, চন্দ্রবোড়া, পাইথন- সব রকম সাপই তিনি ধরেন। পরে বন দফতরের মাধ্যমে সেগুলিকে বনে ছেড়ে দেন। ২০১০ সালে প্রশিক্ষণ নেন সর্প বিশেষজ্ঞ দীপক মিত্রের কাছে। দুর্গাপুর তো বটেই, পানাগড়, রানিগঞ্জ, অণ্ডাল, বাঁকুড়া সব জায়গা থেকে তাঁর ডাক আসে।
দেবাশিসবাবুর মতে, সাপ বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিরক্ত না করলে এরা কাউকে কামড়ায় না। তাই অযথা আতঙ্কিত হয়ে সাপ মেরে ফেললে পরিবেশের ক্ষতি হবে। সেজন্য সাপ নিয়ে সচেতনতা শিবির করে থাকেন তিনি।