আর কোনও সুশান্তকে যেন চলে যেতে না হয়
রিয়া সুশান্তের সঙ্গে ঠিক কি করেছিল? রিয়া সুশান্তকে মাদক দিয়েছিল? রিয়া কতটা জড়িত সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গে? ইত্যাদি নানান প্রশ্ন ঘুরে-ফিরে বেরাচ্ছে আমাদের মনে! বিভিন্ন চ্যানেলে!
না, আমি এই নিয়ে কোনও কনক্লুশনের কথা বলছি না। গোড়া থেকে ভাবনাটা ভাবা যাক। কি শিক্ষা পাওয়া গেল, পুরো ঘটনা থেকে, আসুন খোঁজ নিই।
নিউজ চ্যানেল প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু নতুন ভিডিও প্রকাশ করছে। আর তারপর থেকেই নেমে আসছে ঝড়-দর্শক সমাজে। সুশান্ত সিং রাজপুতের বিশাল সংখ্যক ফ্যান ফলোয়ার। তাদের বিদ্রোহে প্রায় ধামা পড়তে যাওয়া কেস এখন সিবিআইয়ের হাতে। সাধুবাদ!
মাদক। সবাই দূরে থাকো। কড়া আইন। নজরদারি। ভীষণ চেনা কথা। আদৌও কতটা মানা হচ্ছে! মানতে দেওয়া হচ্ছে! পর্দার আড়ালে-একটা বড় অর্থনীতি জড়িয়ে। একটা প্রতিভাবান ছেলে। জীবনের কর্মযোগে সদ্য নাম করতে শুরু করেছে। এগিয়ে চলেছে পুঁই এর লতার মত! তড়তড় করে। নামি-দামি নায়িকাদের পাশে স্থান করে নিচ্ছে। ঠিক তখনই চলে যেতে হল তাকে। অসীমের উদ্দেশ্যে যাত্রায়। অস্বাভাবিক ভাবে। আনুবীক্ষনিক যন্ত্র লাগে না, সেটা বুঝে নিতে। সাদা চোখেই বোঝা যায়। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নটা কেবলই ভাবাচ্ছে। আপামর আবেগপ্রবণ বাঙালিকে।
পড়ুয়া, যুবক-যুবতী সকলের কাছেই আমার প্রশ্ন- যারা শুধু ভালো লাগবে বলে মাদক নিচ্ছ তারা কি এবার ভাববে না- ‘ছিচোড়ে’র মত আত্মহত্যা বিরোধী সিনেমা করে নাম হয় যে অভিনেতার, তার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িয়ে যায় মাদক শব্দটা। কে, কেন, তাকে মাদক দিয়েছে বা মাদক নিতে প্রেরণা জুগিয়েছে, তা কতটা সত্যি, সেই সব প্রশ্ন না করে, যদি একটু অন্যরকম করে ভাবা হয়।
মাদক নিলে আধুনিক হওয়া যায়, মাদক নিলে জাতে ওঠা যায়, এমন একটা ধারণা অনেকের মধ্যেই রয়েছে আধুনিক সমাজে। মাদক নেব না। এই ভাবনা ছড়িয়ে দেওয়া যায় না? সুশান্তের ক্ষেত্রে-স্পষ্ট বোঝা যায়, সুশান্ত ভালো অভিনয় করছিল। তাহলে কি তাকে রুখতেই অস্ত্র হিসাবে মাদক ব্যবহার করা হল? দিনের পর পর দিন স্লো পয়জনের মত ব্যবহার করে তাকে শেষ করে দেওয়া হল? এসব প্রশ্ন এখন উঠছেই।
বলা হয়ে থাকে, ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি সহ সমস্ত বড় বড় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিশেষ দোকান থাকে মাদকের। এজেন্ট থাকে তা সাপ্লাই এর। গোড়াতেই কেন বিনাশ করা হয় না? কার বা কাদের প্রশ্রয়ে দুষ্ট চক্র চালিয়ে যায় এই ব্যবসা?
একটা ছেলের জীবন চলে যাবে- তারপর সিবিআই বসবে। অর্থশালীরা টাকা দিয়ে নিজেদের নাম ডিলিট করবে লিস্ট থেকে। ব্যাস! বিদ্রোহ-বিচার সব শেষ! অবাক কান্ড! এই তো প্রথা। চলছে, চলবে। তাই সমাজের উপর, প্রশাসনের ওপর ভরসা না করে, নিজেরা দেখে শেখা উচিত। সুশান্ত কোথায় পৌঁছানোর কথা ছিল আর কোথায় পৌঁছে গেল!
মাদক বিরোধী দিবস পালন করলে হবে না, শিক্ষিত সমাজকে মাদক নেওয়া বন্ধ করতে হবে। এখনই।